কেন পড়ব সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং?

 

silver MacBook turned on

 

তুমি যদি লজিক্যালি চিন্তা করতে পছন্দ কর, যদি তোমার গণিত ভাল লাগে, নতুন নতুন সমস্যা নিয়ে ভাবতে, সমস্যার সমাধান খুঁজে বের করতে যদি তুমি ভালোবাসো, তবে সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং তোমার জন্য। তোমার বানানো গেম সবাই খেলছে বা তোমার বানানো একটা অ্যাপ ব্যবহার করে মানুষের জীবন অনেক সহজ হয়ে যাচ্ছে, ব্যাপারটা দারুণ না?


সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং এ পড়াশোনার প্রায় পুরোটাই ব্যবহারিক। সবকিছুই প্র্যাক্টিক্যালি করতে হয়, এবং বেশ কিছু সফটওয়্যার প্রোজেক্ট করতে হয়। তোমার তৈরি প্রোজেক্টগুলো নিয়ে তুমি যেতে পারবে বিভিন্ন প্রোজেক্ট শোকেসিং আর হ্যাকাথনে। প্রোজেক্ট শোকেসিং এ তোমার করা প্রোজেক্টগুলো দেখবেন সফটওয়্যার ইন্ডাস্ট্রির সিইও, সিটিও রা। হ্যাকাথনগুলোয় তোমার কাছে চাওয়া হবে বিভিন্ন রিয়েল-লাইফ প্রবলেমের সফটওয়্যার-ভিত্তিক সলিউশান। ৮ ঘন্টা, ৩৬ ঘন্টা কিংবা ৪৮ ঘন্টা দীর্ঘ হ্যাকাথনগুলোয় সমস্যা সমাধান করতে গিয়ে শিখতে পারবে আরও অনেক কিছুই! শোকেসিং আর হ্যকাথন এর মজার জগৎ নিয়ে অন্য কোনো লেখায় বিস্তারিত বলব। 


শুধুমাত্র প্রোজেক্ট শোকেসিং আর হ্যাকাথনই নয়, আছে বিশাল গবেষনার ক্ষেত্র। আছে ক্লাউড কম্পিউটিং, অপটিমাইজেশন, ইমেজ প্রসেসিং অ্যান্ড প্যাটার্ন রিকগনিশন, ওয়্যারলেস নেটওয়ার্ক এন্ড সিকিউরিটি, ইনফরমেশন রিট্রিভাল, সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিংসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে রিসার্চের সুযোগ। কে জানে হয়ত তুমি সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং পড়তে এসে সম্পূর্ণ নতুন কোনো রিসার্চ এরিয়ায় কাজ করে একদম নতুন কিছু আবিষ্কার করে বসবে!


কোথায় কোথায় পড়ানো হয়?

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অফ টেকনোলজি (আইইউটি), ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি (ডিআইইউ), নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এ পড়ানো হয় এই বিষয়টি। 


একাডেমিক তথ্যঃ

এবার আসা যাক সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং সাবজেক্টে কী কী শেখানো হয়, সে প্রসঙ্গে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্য প্রযুক্তি ইনস্টিটিউট এ চার বছরের সম্পূর্ণ প্রোগ্রামটি মোট ৮টি সেমিস্টারে ভাগ করা হয়েছে। প্রতি সেমিস্টারে রয়েছে ৬টি করে কোর্স। মূল কোর্সগুলো হচ্ছে - 


  • Introduction to Software Engineering

  • Structured Programming

  • Object-Oriented Concepts

  • Data Structure and Algorithm

  • Design Pattern

  • Discrete Mathematics

  • Probability and Statistics for Engineers

  • Calculus and Analytical Geometry

  • Combinatorial Optimization 

  • Computer Networking

  • Numerical Analysis for Engineers

  • Software Requirements Specification and Analysis

  • Database Management System

  • Web Technology

  • Operating System

  • Artificial Intelligence

  • Computer Architecture

  • Distributed Systems

  • Software Security

  • Software Testing and Quality Assurance

  • Software Maintenance

  • Project Management

  • Business Psychology

  • Sociology

  • Professional Ethics for Information Systems

  • Management Information Systems

  • Business Communications


আরও বিস্তারিত জানতে ঘুরে আসতে পারো নিচের ওয়েবসাইটগুলো থেকেঃ


Institute of Information Technology, University of Dhaka:

http://www.iit.du.ac.bd/ 

Institute of Information and Communication Technology (SUST): 

https://www.sust.edu/institutes/iict

Noakhali Science and Technology University  (NSTU):

http://iit.nstu.edu.bd/

Daffodil International University:

https://swe.daffodilvarsity.edu.bd/


এছাড়া ঘুরে আসতে পারো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্য প্রযুক্তি ইনস্টিটিউট এর অফিশিয়াল ইউটিউব চ্যানেলটি https://www.youtube.com/channel/UC8EQjl_yJh7MCHV7p7SCk0g


ইন্টার্নশিপঃ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও  শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এর সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং এ চতুর্থ বর্ষের শুরুতে অর্থাৎ সপ্তম সেমিস্টারের পুরোটা জুড়েই রয়েছে ইন্টার্নশিপ। এসময়টায় শিক্ষার্থীরা SELISE rockin' software, Brain Station 23, Cefalo, Orion Informatics Ltd সহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে ইন্টার্ন হিসেবে কাজ করে অভিজ্ঞতা অর্জন করে। 


জব মার্কেটঃ

বর্তমানে চাকরির বাজারে সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং এর আলাদা গুরুত্ব আছে সেটা বলার অপেক্ষা রাখেনা। সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং এ পড়াশোনা শেষ করে সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে বিভিন্ন সফটওয়্যার ফার্মে জয়েন করার সুযোগ রয়েছে। সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারদের কাজকেও আবার বিভিন্ন ভাগে ভাগ করা যায়, সেসব নিয়ে আরও বিস্তারিত আলোচনা করা হবে পরবর্তীতে। একটা মজার বিষয় হচ্ছে, ৭ম সেমিস্টারে ইন্টার্নশিপের পারফরম্যান্সের ওপর ভিত্তি করে অনেকেরই গ্র্যাজুয়েশনের পর চাকরি কনফার্ম হয়ে যায়। কেউ কেউ আন্ডারগ্র্যাডে থাকাকালীন পার্টটাইম চাকরিরও অফার পায়। অর্থাৎ ইন্টার্নশিপের অভিজ্ঞতা থাকায় চাকরির বাজারে অনেকটাই এগিয়ে থাকে এই বিভাগের শিক্ষার্থীরা। এছাড়া রয়েছে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা ও গবেষণা করার সুযোগ। রয়েছে দেশের বাইরেও কাজ করার সুযোগ। তথ্যপ্রযুক্তি ইনস্টিটিউটের একজন শিক্ষার্থী বর্তমানে সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে কাজ করছেন Amazon এ।  GEOTAB, Loblaw Digital সহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানেও কাজ করছেন আরও অনেকে।


স্যালারিঃ 

ফ্রেশার হিসেবে জয়েন করার পর সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারদের স্টার্টিং স্যালারি সাধারণত ৩০-৩৫ হাজার হয়ে থাকে।


উচ্চশিক্ষাঃ

এ বিষয়ে পড়ে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, ইউরোপ, অস্ট্রেলিয়া, কোরিয়া, জাপানে উচ্চশিক্ষা গ্রহণের সুযোগ। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং এর অনেক শিক্ষার্থী এখন উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করছেন Carnegie Mellon University, Ryerson University, North Carolina State University, University of Cambridge, University of Illinois at Urbana-Champaign সহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে, Max Planck Institute এ পোস্ট-ডক করছেন, রিসার্চ ইন্টার্ন হিসেবে কাজ করছেন IBM Watson, Microsoft এ।


লেখকঃ

নোশিন তাহসিন সাজ, রাকিবুল ইসলাম

শিক্ষার্থী, চতুর্থ বর্ষ,

সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং

তথ্যপ্রযুক্তি ইনস্টিটিউট,

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।






Comments